কবিতা

হেলাল হাফিজের কবিতা

সম্মানিত পাঠক বন্ধুগণ আজ আমরা আপনাদের মাঝে বর্তমান সময়ের একজন আধুনিক বাংলাদেশের কবির কবিতা গুলো উপস্থাপন করব। যার কবিতা বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে বাংলাদেশের প্রতিটি স্থানে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তিনি আর কেউ নয় তিনি হচ্ছেন হেলাল হাফিজ। আজকে আমরা আপনাদের মাঝে হেলাল হাফিজের কবিতাগুলো উপস্থাপন করব। বাংলাদেশের একজন আধুনিক কবি হিসেবে বর্তমান সময়ে হেলাল হাফিজ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন সেই সাথে তার লেখা কবিতা গুলো প্রতিটি মানুষের কাছে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাইতো অনেকেই ব্যক্তিগত জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে হেলাল হাফিজের কবিতাগুলো অনুসন্ধান করে থাকেন। তাদের উদ্দেশ্যে আজকে আমরা আপনাদের মাঝে হেলাল হাফিজের কবিতা গুলো উপস্থাপন করেছি। যেগুলো আপনি সংগ্রহ করে আপনার ব্যক্তিগত জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই কবিতাগুলো ব্যবহার করতে পারবেন।

বাংলাদেশের একজন আধুনিক কবি। তিনি স্বল্পপ্রজ হলেও বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে তার লিখিত কবিতা গুলো বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ১৯৮৬ সালে তার প্রথম কবিতা সংকলন যে জলে আগুন জলে প্রকাশিত হওয়ার পরে ৩৩টিরও বেশি সংস্ককরণ করা হয়েছে। হেলাল হাফিজ তার জীবনে বেশ কিছু কবিতা লিখেছেন তার মধ্যে তার একটি জনপ্রিয় কবিতা হচ্ছে নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়।যে কবিতার দুটি পঙ্ক্তি প্রতিটি মানুষের কাছে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। হেলাল হাফিজের কবিতার এই দুটি হচ্ছে ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার সময় তার’এবং এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।

হেলাল হাফিজের এই কবিতার লাইন দুটি বাংলাদেশের প্রতিটি কবিতা প্রেমিক মানুষের মুখে মুখে প্রসারিত হয়েছে এবং ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এই কবিতার লাইন থেকে প্রতিটি মানুষ জীবনে উদ্দেশ্য গুলো পূরণ করার শক্তি খুঁজে পায় এবং অনুপ্রেরণা পেয়ে থাকে। তাইতো হেলাল হাফিজের কবিতা বাস্তব জীবনে মানুষকে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা প্রদান করে থাকে এজন্যই বর্তমান সময়ে প্রতিটি মানুষের কাছে আধুনিক কবি হেলাল হাফিজের কবিতাগুলো জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

হেলাল হাফিজের কবিতা

বাংলাদেশের একজন আধুনিক কবি হিসেবে বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে হেলাল হাফিজ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তার বিভিন্ন কবিতা প্রতিটি দর্শকের মাঝে এখন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। হেলাল হাফিজের নিষিদ্ধ সম্পাদকীয় কবিতাটির মাধ্যমে মূলত তিনি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মাঝে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। এজন্য অনেকেই অনলাইনে হেলাল হাফিজের কবিতা গুলো অনুসন্ধান করে থাকেন। তাদের উদ্দেশ্যে আজকে আমরা হেলাল হাফিজের বেশ কিছু কবিতা তুলে ধরব যেগুলো আপনি আপনার জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কবিতাগুলো ব্যবহার করতে পারবেন। আপনি আমাদের আজকের এই হেলাল হাফিজের কবিতাগুলো আপনার পরিচিত প্রতিটি মানুষের মাঝে শেয়ার করে দিয়ে তাদেরকে বাস্তব জীবনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিতে পারবেন। নিচে হেলাল হাফিজের কবিতা গুলো তুলে ধরা হলো:

কবিতা: যেভাবে সে এলো
কবির নাম: হেলাল হাফিজ
কবি: হেলাল হাফিজ
বিষয়: স্বাধীনতা
কাব্যগ্রন্থের নাম: যে জলে আগুন জ্বলে
সময়: মার্চ ১৮, ১৯৮১

4.5/5 – (15 votes)

অসম্ভব ক্ষুধা ও তৃষ্ণা ছিলো,
সামনে যা পেলো খেলো,
যেন মন্বন্তরে কেটে যাওয়া রজতজয়ন্তী শেষে
এসেছে সে, সবকিছু উপাদেয় মুখে।

গাভিন ক্ষেতের সব ঘ্রাণ টেনে নিলো,
করুণ কার্নিশ ঘেঁষে বেড়ে ওঠা লকলকে লতাটিও খেলো,
দুধাল গাভীটি খেলো
খেলো সব জলের কলস।

শানে বাধা ঘাট খেলো
সবুজের বনভূমি খেলো
উদাস আকাশ খেলো
কবিতার পান্ডুলিপি খেলো।

দু’পায়া পথের বুক, বিদ্যালয়
উপাসনালয় আর কারখানার চিমনি খেলো
মতিঝিলে স্টেটব্যাংক খেলো।

রাখালের অনুপম বাঁশিটিকে খেলো,
মগড়ার তীরে বসে চাল ধোয়া হাতটিকে খেলো

স্বাধীনতা সব খেলো, মানুষের দুঃখ খেলো না।

কবিতা: শামুক
কবির নাম: হেলাল হাফিজ
কবি: হেলাল হাফিজ
কাব্যগ্রন্থের নাম: যে জলে আগুন জ্বলে
সময়: জুলাই ২৯, ১৯৮০

4.8/5 – (5 votes)

‘অদ্ভুত, অদ্ভুত’ বলে
সমস্বরে চিৎকার করে উঠলেন কিছু লোক।
আমি নগরের জ্যেষ্ঠ শামুক
একবার একটু নড়েই নতুন ভঙ্গিতে ঠিক গুটিয়ে গেলাম,
জলে দ্রাঘিমা জুড়ে
যে রকম গুটানো ছিলাম,
ছিমছাম একা একা ভেতরে ছিলাম,
মানুষের কাছে এসে
নতুন মুদ্রায় আমি নির্জন হলাম,
একাই ছিলাম আমি পুনরায় একলা হলাম।

কবিতা: অহংকার
কবির নাম: হেলাল হাফিজ
কবি: হেলাল হাফিজ
কাব্যগ্রন্থের নাম: যে জলে আগুন জ্বলে
সময়: অক্টোবর ১৩, ১৯৮০

4.5/5 – (2 votes)
বুকের সীমান্ত বন্ধ তুমিই করেছো
খুলে রেখেছিলাম অর্গল,
আমার যুগল চোখে ছিলো মানবিক খেলা
তুমি শুধু দেখেছো অনল।
তুমি এসেছিলে কাছে, দূরেও গিয়েছো যেচে
ফ্রিজ শটে স্থির হয়ে আছি,
তুমি দিয়েছিলে কথা, অপারগতার ব্যথা
সব কিছু বুকে নিয়ে বাঁচি।
উথাল পাথাল করে সব কিছু ছুঁয়ে যাই
কোনো কিছু ছোঁয় না আমাকে,
তোলপাড় নিজে তুলে নিদারুণ খেলাচ্ছলে
দিয়ে যাই বিজয় তোমাকে।
কবিতা: অগ্ন্যুৎসব
কবির নাম: হেলাল হাফিজ
কবি: হেলাল হাফিজ
কাব্যগ্রন্থের নাম: যে জলে আগুন জ্বলে
সময়: আগস্ট ১২, ১৯৭২

5/5 – (1 vote)

ছিল তা এক অগ্ন্যুৎসব, সেদিন আমি
সবটুকু বুক রেখেছিলাম স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রে
জীবন বাজি ধরেছিলাম প্রেমের নামে
রক্ত ঋণে স্বদেশ হলো,
তোমার দিকে চোখ ছিলো না
জন্মভূমি সেদিন তোমার সতীন ছিলো।

আজকে আবার জীবন আমার ভিন্ন স্বপ্নে অংকুরিত অগ্ন্যুৎসবে
তোমাকে চায় শুধুই তোমায়।

রঙিন শাড়ির হলুদ পাড়ে ঋতুর প্লাবন নষ্ট করে
ভর দুপুরে শুধুই কেন হাত বেঁধেছো বুক ঢেকেছো
যুঁই চামেলী বেলীর মালায়,
আমার বুকে সেদিন যেমন আগুন ছিলো
ভিন্নভাবে জ্বলছে আজও,
তবু সবই ব্যর্থ হবে
তুমি কেবল যুঁই চামেলী বেলী ফুলেই মগ্ন হলে।

তার চেয়ে আজ এসো দু’জন জাহিদুরের গানের মতন
হৃদয় দিয়ে বোশেখ ডাকি, দু’জীবনেই বোশেখ আনি।
জানো হেলেন, আগুন দিয়ে হোলি খেলায় দারুন আরাম
খেলবো দু’জন এই শপথে
এসো স্ব-কাল শুদ্ধ করি দুর্বিনীত যৌবনেরে।

কবিতা: হিরণবালা
কবির নাম: হেলাল হাফিজ
কবি: হেলাল হাফিজ
কাব্যগ্রন্থের নাম: যে জলে আগুন জ্বলে

4.5/5 – (2 votes)

হিরণবালা তোমার কাছে দারুন ঋণী সারা জীবন
যেমন ঋণী আব্বা এবং মায়ের কাছে।

ফুলের কাছে মৌমাছিরা
বায়ুর কাছে নদীর বুকে জলের খেলা যেমন ঋণী
খোদার কসম হিরণবালা
তোমার কাছে আমিও ঠিক তেমনি ঋণী।

তোমার বুকে বুক রেখেছি বলেই আমি পবিত্র আজ
তোমার জলে স্নান করেছি বলেই আমি বিশুদ্ধ আজ
যৌবনে এই তৃষ্ণা কাতর লকলকে জিভ
এক নিশীথে কুসুম গরম তোমার মুখে
কিছু সময় ছিলো বলেই সভ্য হলো
মোহান্ধ মন এবং জীবন মুক্তি পেলো।

আঙুল দিয়ে তোমার আঙুল ছুঁয়েছিলাম বলেই আমার
আঙুলে আজ সুর এসেছে,
নারী-খেলার অভিজ্ঞতার প্রথম এবং পবিত্র ঋণ
তোমাকে নিয়ে কবিতা লিখে সত্যি কি আর শোধ হয়েছে?

কবিতা: লাবণ্যের লতা
কবির নাম: হেলাল হাফিজ
কবি: হেলাল হাফিজ
কাব্যগ্রন্থের নাম: যে জলে আগুন জ্বলে
সময়: অক্টোবর ৩০, ১৯৮১

4.5/5 – (2 votes)

দুরভিসন্ধির খেলা শেষ হয়ে কোনোদিন
দিন যদি আসে,
এই দেশে ভালোবেসে বলবে মানুষ,
অনন্বিত অসন্তোষ অজারকতার কালে এসে
লাবন্যের লকলকে লতা এক খুব কায়ক্লেশে
একদিন তুলেছিলো বিনয়াবনত মাথা
এতোটুকু ছিলো না দীনতা।

অকুলীন এই দিন শেষ হয়ে কোনোদিন
দিন যদি আসে,
শুভ্রতায় স্নিগ্ধতায় সমুজ্জল মানুষ এদেশে
বলবে সূর্যের দিকে ছিলো সেই লতাটির মুখ
বলবে মাটির সাথে ছিলো তার গাঢ় যোগাযোগ,
কিছু অক্সিজেন সেও দিয়েছিলো
নিয়েছিলো বিষ
বলবে পুষ্পিত কিছু করেছিলো ধূসর কার্নিশ।

ভালোবাসাবাসিহীন এই দিন সব নয়– শেষ নয়
আরো দিন আছে,
ততো বেশি দূরে নয়
বারান্দার মতো ঠিক দরোজার কাছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button