কবিতা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা

বিশ্বকবি হিসেবে যে কবি আজও মানুষের মাঝে স্মরণীয় হয়ে আছেন তিনি হচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। যাকে বিশ্বকবি ও বিশ্ব নন্দিত কবি বলা হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ সালে কলকাতা জোড়াসাঁকো বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকে তিনি লেখালেখির প্রতি অসম্ভব মনোযোগী ছিলেন। তাইতো তিনি ছোটবেলা থেকে লেখালেখি কে নিজের জীবনের সাথে জড়িয়ে ছিলেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখির মাধ্যমে পারদর্শিতা অর্জন করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর জীবনে অসংখ্য কবিতা গান ছোট গল্প প্রহসন নাটক লিখেছেন। এছাড়া তিনি সকল মানুষের জন্য বেশ কিছু প্রেমের কবিতা রচনা করেছেন। যেগুলো বাস্তব জীবনে প্রতিটি মানুষকে প্রেম সম্পর্কে সুন্দরভাবে জানতে সাহায্য করে। তাইতো অনেকেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা গুলো সংগ্রহ করে থাকেন। আজকের প্রতিবেদনটিতে আমরা এজন্যই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বেশ কিছু প্রেমের কবিতা তুলে ধরেছি।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্বকবি। তিনি তার জীবনে অসংখ্য কবিতা ছোটগল্প নাটক প্রহসন এবং উপন্যাস লিখেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধারে লেখক কবি সাহিত্যিক সুরকার গীতিকার এবং নাট্য অভিনেতা হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। তিনি তার জীবনে অসংখ্য গান ছোটগল্প নাটক উপন্যাস লিখে খ্যাতি অর্জন করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এমন একজন ব্যক্তি যিনি এশিয়া মহাদেশে প্রথম বাংলা সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি সর্বপ্রথম মনের সাথে তেরো সালে বাংলা সাহিত্যের গীতাঞ্জলি কাব্যের জন্য সর্বপ্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ করে থাকেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অসংখ্য গল্পগ্রন্থ ও কবিতা গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি কবিতা হচ্ছে তিনি তার ব্যক্তিগত জীবনে বেশ কিছু প্রেমের কবিতা রচনা করেছেন। যেগুলো আমাদের সকলকে প্রেম সম্পর্কে স্পষ্টভাবে জানতে সাহায্য করে থাকে। তাইতো কবিতা প্রেমে প্রতিটি মানুষ বিশ্বকবির এই প্রেমের কবিতা গুলো তাদের বাস্তব জীবনে অনুসরণ করে থাকেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর লেখালেখির জীবনে বেশ কিছু প্রেমের কবিতা লিখেছেন। এই কবিতাগুলো প্রতিটি মানুষকে ব্যক্তিগত জীবনে প্রেম সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে। তাইতো অনেকেই অনলাইনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা গুলো অনুসন্ধান করে থাকেন। এজন্যই আমরা আজকে নিয়ে এসেছি আমাদের ওয়েবসাইটে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা সম্পর্কিত একটি পোস্ট। আজকের এই পোস্ট থেকে আপনারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা গুলো জানতে পারবেন। আপনি আমাদের আজকের এই কবিতাটি আপনার ব্যক্তিগত জীবনে প্রেম সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া সকলের মাঝে আজকের এই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা গুলো শেয়ার করতে পারবেন। নিচে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা গুলো তুলে ধরা হলো:

অচির বসন্ত হায় এল, গেল চলে

অচির বসন্ত হায় এল, গেল চলে–
এবার কিছু কি, কবি করেছ সঞ্চয়।
ভরেছ কি কল্পনার কনক-অঞ্চলে
চঞ্চলপবনক্লিষ্ট শ্যাম কিশলয়,
ক্লান্ত করবীর গুচ্ছ। তপ্ত রৌদ্র হতে
নিয়েছ কি গলাইয়া যৌবনের সুরা–
ঢেলেছ কি উচ্ছলিত তব ছন্দঃস্রোতে,
রেখেছ কি করি তারে অনন্তমধুরা।
এ বসন্তে প্রিয়া তব পূর্ণিমানিশীথে
নবমল্লিকার মালা জড়াইয়া কেশে
তোমার আকাঙক্ষাদীপ্ত অতৃপ্ত আঁখিতে
যে দৃষ্টি হানিয়াছিল একটি নিমেষে
সে কি রাখ নাই গেঁথে অক্ষয় সংগীতে।
সে কি গেছে পুষ্পচ্যুত সৌরভের দেশে।

(উৎসর্গ কাব্যগ্রন্থ)

অসময় (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা)

বৃথা চেষ্টা রাখি দাও। স্তব্ধ নীরবতা
আপনি গড়িবে তুলি আপনার কথা।
আজি সে রয়েছে ধ্যানে—এ হৃদয় মম
তপোভঙ্গভয়ভীত তপোবনসম।
এমন সময়ে হেথা বৃথা তুমি প্রিয়া
বসন্তকুসুমমালা এসেছ পরিয়া,
এনেছ অঞ্চল ভরি যৌবনের স্মৃতি—
নিভৃত নিকুঞ্জে আজি নাই কোনো গীতি।
শুধু এ মর্মরহীন বনপথ-’পরি
তোমারি মঞ্জীর দুটি উঠিছে গুঞ্জরি।
প্রিয়তমে, এ কাননে এলে অসময়ে,
কালিকার গান আজি আছে মৌন হয়ে।
তোমারে হেরিয়া তারা হতেছে ব্যাকুল,
অকালে ফুটিতে চাহে সকল মুকুল।

(চৈতালি কাব্যগ্রন্থ)

 আছে আমার হৃদয় আছে ভরে

আছে আমার হৃদয় আছে ভরে,
এখন তুমি যা খুশি তাই করো।
এমনি যদি বিরাজ’ অন্তরে
বাহির হতে সকলই মোর হরো।
সব পিপাসার যেথায় অবসান
সেথায় যদি পূর্ণ করো প্রাণ,
তাহার পরে মরুপথের মাঝে
উঠে রৌদ্র উঠুক খরতর।

এই যে খেলা খেলছ কত ছলে
এই খেলা তো আমি ভালবাসি।
এক দিকেতে ভাসাও আঁখিজলে,
আরেক দিকে জাগিয়ে তোল’ হাসি।
যখন ভাবি সব খোয়ালাম বুঝি
গভীর করে পাই তাহারে খুঁজি,
কোলের থেকে যখন ফেল’ দূরে
বুকের মাঝে আবার তুলে ধর’।

কাব্যগ্রন্থঃ গীতাঞ্জলি

আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার

আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার,
পরানসখা বন্ধু হে আমার।
আকাশ কাঁদে হতাশ-সম,
নাই যে ঘুম নয়নে মম,
দুয়ার খুলি হে প্রিয়তম,
চাই যে বারে বার।
পরানসখা বন্ধু হে আমার।

বাহিরে কিছু দেখিতে নাহি পাই,
তোমার পথ কোথায় ভাবি তাই।
সুদূর কোন্‌ নদীর পারে,
গহন কোন্‌ অন্ধকারে
হতেছ তুমি পার।
পরানসখা বন্ধু হে আমার।

(গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থ)

দৃষ্টি

বুঝি গো সন্ধার কাছে শিখেছে সন্ধার মায়া
ওই আঁখিদুটি,
চাহিলে হৃদয়-পানে মরমেতে পড়ে ছায়া,
তারা উঠে ফুটি।
আগে কে জানিত বল কত কি লুকানো ছিল
হৃদয়নিভৃতে–
তোমার নয়ন দিয়া আমার নিজের হিয়া
পাইনু দেখিতে।
কখনো গাও নি তুমি, কেবল নীরবে রহি
শিখায়েছ গান–
স্বপ্নময় শান্তিময় পূরবী রাগিণীতানে
বাঁধিয়াছ প্রাণ।
আকাশের পানে চাই সেই সুরে গান গাই
একেলা বসিয়া।
একে একে সুরগুলি অনন্তে হারায়ে যায়
আধারে পশিয়া।।

কবিতাটি সঞ্চয়িতা বইয়ে প্রকাশিত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
x